গাব্বা, লর্ডসের পর সেঞ্চুরিয়নের দুর্জয় ঘাঁটি ভাঙল ভারত, শামি-বুমরাহর দাপটে ১১৩ রানের ঐতিহাসিক জয়

পঞ্চম দিন দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৯৭ রান তুলে তাদের অবশিষ্ট ৬ উইকেট হারায়

South Africa vs India
South Africa vs India. (Photo by CHRISTIAAN KOTZE/AFP via Getty Images)

গাব্বা ও লর্ডসের পর বিদেশে গিয়ে প্রতিপক্ষের আরও একটি প্রায় অপরাজেয় ঘাঁটি আক্রমণ করে জয় অর্জন করল ভারত। সম্ভাবনা ছিল পঞ্চম দিন বৃষ্টির জন্য ম্যাচ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে দিনের শুরুতে যে আলোকজ্জ্বল আকাশ দেখা গেল ম্যাচ শেষে সেই ঔজ্জ্বল্যই প্রতিফলিত হল ভারতীয় দলের সদস্যদের মুখে। শেষ ব্যাটার লুঙ্গি ঙ্গিডি অশ্বিনের বলে ব্যাকওয়ার্ড শর্ট লেগে পূজারার হাতে ক্যাচ তুলে দিতেই ১১৩ রানের ঐতিহাসিক জয় দিয়ে ভারত সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল।  

টেস্টে প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে সেঞ্চুরিয়নে ঐতিহাসিক জয় ভারতের

দক্ষিণ আফ্রিকা আত্মবিশ্বাসের সাথে দিন শুরু করেছিল। ডিন এলগার ও তেম্বা বাভুমা দুর্দান্ত গতিতে রান করছিলেন। এলগার ও বাভুমা ১০ ওভারে ৩৬ রান যোগ করেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য যখন পরিস্থিতি সহজ হয়ে উঠছিল, তখন জসপ্রীত বুমরাহ স্টাম্প-টু-স্টাম্প বোলিং করে এলগারকে এলবিডাবলুর ফাঁদে ফেলেন। প্রোটি‍য়া অধিনায়ক ১৫৬ বলে ৭৭ রান করেন।

কুইন্টন ডি কক নেমেই ঝোড়ো ২১ রান করেন ২৮ ডেলিভারিতে। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হওয়ার মাশুল গুণতে হয় তাঁকে যখন তিনি  সিরাজের বল কাট করতে গিয়ে প্লেড-অন হন। পরের ওভারেই উইয়ান মুল্ডার বিদায় নেন শামির নিখুঁত আউট সুইঙ্গারে। বল ব্যাটে খোঁচা লেগে জমা পড়ে উইকেটকিপার পান্তের দস্তানায়। 

বৃথা গেল তেম্বা বাভুমার প্রতিরোধ 

মার্কো জ্যানসেন নেমে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তিনটি চার মারলেও মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর ১৩ রানের মাথায় আউট হন। এবারও সেই শামি-পান্ত যুগলবন্দী। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের একটি ফ্লাইটেড বলে কাগিসো রাবাডা সোজা পয়েন্টে মহম্মদ শামির হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এটি ছিল এই টেস্টে কোন স্পিনারের পাওয়া প্রথম উইকেট।

পরের বলেই ঙ্গিডি আউট হন এবং এখন অশ্বিনের সামনে ৩রা জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা জোহানেসবার্গ টেস্টে হ্যাট-ট্রিক করার সুযোগ। ইংল্যান্ড (২০০০) ও অস্ট্রেলিয়ার (২০১৪) পরে তৃতীয় সফরকারী দল হিসেবে সেঞ্চুরিয়নে টেস্ট ম্যাচ জিতল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে একটি শক্তিশালী দুর্গ হিসেবে বিবেচিত হওয়া সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট প্রোটিয়ারা ২৮টি টেস্টে ২১টি জয় পেয়েছে।

এক দিক থেকে যখন উইকেট পড়ছে তখন অন্য দিকে একা লড়ে গেলেন তেম্বা বাভুমা। এই ডানহাতি ব্যাটার তাঁর দৃঢ় ডিফেন্সের জোরে ৮০টি ডেলিভারির মুখোমুখি হয়ে ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে গেলেন। যদিও তাঁর ইনিংস বৃথা গেল।

৮ উইকেট নিয়ে মহম্মদ শামি ম্যাচ সেরা হওয়ার দৌড়ে থাকলেও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কেএল রাহুলকে। তিনি প্রথম ইনিংসে ১২৩ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন।

ভারত ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জিতেছে, ইংল্যান্ডে সিরিজে এগিয়ে আছে, এবং এখন বছর শেষ করল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। এখন দেখার তারা তাদের ‘ফাইনাল ফ্রন্টিয়ার’ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সিরিজ জিতে ফিরতে পারে কি না।