ডি’কক-লোকেশ রাহুলের বিধ্বংসী পার্টনারশিপের বিরুদ্ধে ব্যর্থ হল রিঙ্কুদের লড়াই, প্লেঅফে লখনউ

Mohsin Khan and Andre Russell
Mohsin Khan and Andre Russell. (Photo Source: IPL/BCCI)

কুইন্টন ডিকক-লোকেশ রাহুলের বিরাট পার্টনারশিপ। লড়াইটা শেষ পর্যন্ত হলেও, লখনউয়ের রানের পাহাড় টপকাতে পারল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। সেইসঙ্গে আইপিএলের প্লে অফের যে ক্ষীণ সুযোগটা ছিল, সেটাও শেষ হয়ে গেল কলকাতার নাইটদের। নভী মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পটেল স্টেডিয়ামে এদিন সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে ৯টা ২০ পর্যন্ত চলল ঝড়। লোকেশ রাহুল কুইন্টন ডিককের রানের সাইক্লোনে নাইট রাইডার্সের সমস্ত আশা, স্বপ্ন এদিন তছনছ হয়ে গেল । যদিও শেষপর্যন্ত নাইটরা দুর্ধর্ষ লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রিঙ্কু, শ্রেয়সদের লড়াই ব্যর্থই হল এদিন। টাটান উত্তেজনার ম্যাচ ২ রানে জিতল লখনউ সুপার জায়ান্টস

পরপর দু ম্যাচ হেরে এই ম্যাচে জিততে মরিয়া ছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস। অন্যদিকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের আশা জিইয়ে রাখতে এই ম্যাচ ছিল মরণ-বাঁচন ম্যাচ। একটা ক্যাচ মিসেই যেন বদলে গেল গোটা ম্যাচের চিত্রটা। কুইন্টন ডিককের ১২ রানের মাথায় ক্যাচ ফস্কেছিলেন অভিজিত্ তোমার। তারই খেসারত দিতে হল গোটা ম্যাচ জুড়ে। সেই ডিককই এদিন আইপিএলের মঞ্চে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল। নাইট বোলারদের এদিন তাদের কোনও উইকেটই তুলতে পারেননি।

কেকেআরকে ২ রানে প্লে অফের নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলল লখনউ সুপার জায়ান্টস

টস জিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে এদিন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। পরপর দু ম্যাচে লখনউয়ের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে নানান সমালোচনা চলেছে। সেটরই জবাব যে এদিন এমনভাবে তারা দেবে, তা বোধহয় কেউ ভাবতেও পারেননি। ম্যাচে নাইট রাইডার্সের সুযোগ বলতে এদিন ছিল একটাই। কুইন্টন ডিককের ১২ রানের মাথায়। সেই ক্যার ফস্কান অভিজিত্ তোমার। আর সেইসঙ্গে ম্যাচটাও এদিন ফস্কে যায় শ্রেয়স আইয়ারদের হাত থেকে।

মাঠে শুরু হয় কুইন্টন ডিককর তান্ডব। সঙ্গে রয়েছেন লোকেশ রাহুল। তবে তিনি ডিককের মতো আক্রমণাত্মক ছিলেন না। একদিকের উইকেট ধরে রেখে ডিককে যোগ্য সঙ্গত দেওয়ার কাজটাই চালিয়ে গিয়েছেন  তিনি। সময় যত গড়িয়েছে ডিকক ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে নাইটদের সামনে। উমেশ যাদব., সাউদি, রাসেলরা এদিন নাস্তানাবুদ হয়েছেন। টিম সাউদি একাই দিয়েছেন ৫৭ রান। প্রোটিয়া তারকার ব্যাট থেকে এওদিন শুধুই ছিল চার ও ছয়ের বন্যা। সেইসঙ্গে লোকেশ রাহুলও ছিলেন নিজের মেজাজে।

আইপিএলের যে ম্যাচ কেকেআরকে জিততেই হত, সেই ম্যাচেই আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ওপেনিং পার্টনারশিপটা এদিন করল লোকেশ রাহুল ও কুইন্টন ডিকক জুটি। ৭০ বলে ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন কুইন্টন ডিকক। তাঁর গোটা ইনিংসটা সাজানো রয়েছে ১০টি চার ও ১০টি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। অন্যদিকে লোকেশ রাহুলের রান ৫১ বলে ৬৮। লখনউ করে বিনা উইকেটে ২১০।

ম্যাচের ভবিষ্যতটা কার্যত তখন থেকেই পরিষ্কারষ। তবুও নাইট রাইডার্স একটা চেষ্টা চালিয়েছিল। আইপিএলের মঞ্চে ২০৬ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড রয়েছে কেকেআরেরে। আবার কী সেটার পূরণরাবৃত্তি করতে পারবেন তারা। এই প্রশ্নই তখন ঘোরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।  ব্যাট করতে নেমে  ৯ রানে মধ্যেই ২ উইকেট খোয়ায় কেকেআর। সেই সময়ই একটা মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা শুরু নাইট তারকাদের। অধিনায়ক শ্রেয়স নামার পর থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে।

লখনউয়ের কাছে হেরে এবারের মতো প্লে অফের আশা শেষ কলকাতা নাইট রাইডার্সের

সেইসঙ্গে প্রথমে কিছুক্ষণ নীতিশ রানা। এরপরই শ্রেয়সকে সঙ্গ দেওয়া শুরু স্যাম বিলিংসের। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ১০ ওভারে ৯৯ রান করে ফেলে নাইট রাইডার্স। শ্রেয়সকে ঘিরে হঠাত্ই যেন একটা আশা ঝাগতে শুরু করেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ৫০ রান করেই ফিরে যান তিনি। এদিন যে রাসেলকে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল তিনিও চূুড়ান্ত ব্যর্থ।  ৫ বলে ১০ রান করেন। তার আগে স্যাম বিলিংস ফেরেন ৩৬ রানে। কিন্তু নাইট রাইডার্স এদিন হাল ছাড়ার পাত্র ছিল না। ম্যাচ হেরে গেলেও রিঙ্কুর লড়াইটা বোধহয় ভুলবে না কেউ।

শেষ তিন ওভারে সুনীল নারিনের সঙ্গে মাঠে শুরু রিঙ্কু সিংয়ের তান্ডব। লখনউ বোলারদেরও রীতিমত বিধ্বস্ত করতে শুরু করেছিলেন তারা। শেষ ওভারে ম্যাচে বাকি ছিল তখন ২১ রান। বিদ্ধ্বংসী রিঙ্কু স্টয়নিসকে বিধ্বস্ত করতে শুরু করেন। পরপর ছয়, চারে তখন অ্স্বস্তিতে লখনউও। আশা জাগলেও কিন্তু শেষরক্ষা হল না। রিঙ্কুকে থামতেই হয়। ২০৮ রানেই থামে নাইট রাইডার্স