বক্সিং ডে টেস্ট ঘিরে সেঞ্চুরিয়ানে দর্শকদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে

Source: (Photo by PHILL MAGAKOE / AFP) (Photo by PHILL MAGAKOE/AFP via Getty Images)

গতকাল বক্সিং ডে টেস্ট ঘিরে সেঞ্চুরিয়ানে দর্শকদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। একদিন আগেই বড়দিন কাটিয়ে বর্ষশেষের উৎসবে মেতেছে বিশ্ব। তার পাশাপাশি বৃষ্টিস্নাত সকাল পেরিয়ে সকালে রোদের মুখ দেখে সুপারস্পোর্টস পার্ক। মাঠের পার্শ্ববর্তী স্ট্যান্ডে দর্শক ভিড় করতে শুরু করে সকাল থেকেই। তার পাশাপাশি শুরু হয়ে যায় বার্বিকিউ রান্না। ছাতার নিচে বার্বিকিউ ওভেন থেকে ধোঁয়া উঠতে থাকে বৃষ্টিস্নাত দক্ষিণ আফ্রিকার আদিম ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য প্রদর্শনীর পর লাল বলের ক্রিকেটে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপের মুখ থুবড়ে পড়া নিয়ে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। কিন্তু বিশেষঙ্গরা মনে করছেন বৃষ্টি বিঘ্নিত টেস্টের প্রথম দিন দেখেই কখনো রায় দেওয়া সম্ভব নয়। প্রথমে বিরাট কোহলি ও শ্রেয়স আইয়ারের ক্যামিও পার্টনারশিপ এবং পরবর্তীতে কে এল রাহুলের অনবদ্য অপরাজিত ইনিংস ভারতকে কিছুটা হলেও স্বস্তিব্যঞ্জক অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। আজ যদি কেএল রাহুল নিজের সেঞ্চুরি অবধি মাঠে টিকে যেতে সক্ষম হন, তাহলে প্রোটিয়াবাহিনী বড়োসড়ো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এমনি বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে বারবার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যাটসম্যান এবং বোলাররা। সেক্ষেত্রে চতুর্থ উইকেটে এসে ম্যাচ বার করা প্রোটিয়া বাহিনীর কাছে অসম্ভবের সমতুল্য হয়ে উঠতে পারে। তাঁদেরও এই একই পিচে এহেন প্রতিকূল আবহাওয়াকে সঙ্গী করেই বাইশ গজে নামতে হবে। সেক্ষেত্রে স্কোরবোর্ডে ভারতের তরফে ২৫০র বেশি রান থাকলে তা চেজ করা কঠিন হবে মার্করাম-এলগারদের পক্ষে। মহম্মদ শামির চোট ভারতীয় দলের একটি অন্যতম দুর্বলতা হলেও শাপে বর হতে পারে কৃষ্ণার বোলিং। সাথে রয়েছে বুমরাহ-সিরাজের যুগলবন্দী। এর পাশাপাশি শার্দুল ঠাকুরকে সঙ্গ দিতে রবিনচন্দ্র অশ্বিনের স্পিনও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। যদিও এটি স্পিনিং উইকেট নয়।

তবে কাগিসো রাবাডার ৫ উইকেটের কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে।

স্যাঁতস্যাঁতে সবুজ উইকেটের সুবিধা তুলেছে ২৮বছরের তরুণ। বাউন্সের পাশাপাশি অপ্রতিরোধ্য সুইং আর গতির বৈচিত্র্যকে সুন্দরভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে সদ্য পাঞ্জাব কিংসে যুক্ত হওয়া যুবক। তবে জ্যানসেন আর কোয়েটজে উইকেট নিয়েও বিশেষ সাড়া জাগাতে পারেনি। নবাগত বার্গারও একই দলের পথিক। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট মহলে অনেকেই মনে করছেন, তাদেরকে নিয়ে যতটা হইচই হয়েছিল আদৌ তারা সেরকম প্রদর্শনী দেখাতে অক্ষম হয়েছে। তবে এদিন মাঠে দর্শক ছিল দেখার মতো। এইমুহূর্তে যেভাবে ভারতীয়রা বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছে, তাতে সব দেশেই হোম গ্রাউন্ডের সুবিধা পায় ব্লু-ব্রিগেড। তবে স্পোর্টসম্যান স্পিরিটে দক্ষিণ আফ্রিকাও এদিন পিছিয়ে ছিল না। উৎসবমুখর সপ্তাহে ম্যাচের প্রথমদিনে যখন বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে গালিচা চেড়া কভার ড্রাইভ আসে, উঠে দাঁড়িয়ে সংবর্ধনা জানাতে ভোলে না সেঞ্চুরিয়ান। বর্ষশেষের উৎসবমুখর সপ্তাহে জমজমাট মঙ্গলবার উপভোগ করলো স্পোর্টসপার্ক, এই বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না।