অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স, আইপিএল ফাইনালে মাতোয়ারা মোতেরা

Gujarat Titans2
Gujarat Titans2. ( Photo Source: ipl/bcci )

বড় মঞ্চ সবসময়ই বড় নায়কদের। আর সেই কথাটা যে একেবারেই ভুল নয়, তা এদিন ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্বপ্নের দৌড়ে রাজস্থানের রয়্যালসদের হারিয়ে রুপকথা তৈরি করল হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্স। আইপিএলের অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে আইপিএলের মঞ্চে এক নতুন ইতিহাস লিখলেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে আইপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়নদের নাম এখন গুজরাত। আর গুজরাত টাইটান্সের সেই স্বপ্নের নায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। বোলিং, ব্যাটিংয়ে একাহাতেই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তিনি। ৭ উইকেটে রাজস্থানকে হারিয়ে আইপিএলের অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স।

এবারের আইপিএলের আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। যদিও হার্দিক পান্ডিয়ার কিন্তু দল পেতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি। মেগা নিলামের ঘরের দলের অধিনিয়াক হিসাবে ডাক পান হার্দিক। আইপিএলে অভিষেক মরসুমেই হার্দিককে নিজেদের নেতা হিসাবে বেছে নিয়েছিল গুজরাত টাইটান্স। সঠিক ব্যক্তির ওপরই যে সঠিক দায়িত্ব উঠেছিল সেদিন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

াইপিএলের অভিষেক মরসুমেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস তৈরি করল গুজরাত টাইটান্স

যদিও আইপিএল শুরু হওয়ার সময় এই দল এবং হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে নাান কথাবার্তা শোনা গিয়েছিল। জবাবটা মুখে নয় মাঠেই দেবেন ঠিক করে রেখেছিলেন তিনি। সেটাই হল। আইঅপিএলের শুরু থেকেই একটা স্বপ্নের দৌড় আরম্ভ করেছিল তারা। তার শেষটা বোধহয় মনটাই হওয়ার ছিল। আইপিএলের মঞ্চে গুজরাত টাইটান্সের এই উত্থান বোধহয় কোনো রুপকথার চেয়েও কম নয়। আর সেই ফাইনালের মঞ্চেই জ্বলে উঠলেন হার্দিক পান্ডিয়া। এদিনই তাঁর দলকে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল।

বল হাতে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে গুজরাত টাইটান্সের জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়ে এসেছিলেন তিনিই। ব্যাট হাতেও কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে সামলে দিয়ে গেলেন তিনি। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম এদিন শুধুই হার্দিকময়। টস জিতে এদিন প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। লক্ষ্যটা ছিল গুজরাতের সামনে বড় রানের পাহাড় তৈরি করা। আর সেই লক্ষ্যে তাদের প্রধান অস্ত্র সেই জস বাটলার।

কিন্তু গুজরাত টাইটান্সও বল হাত শুরু থেকেই বেশ হিসাবী ছিল এদিন। যশস্বী জয়সওয়ালরা চেষ্টা করলেও, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে উঠতে পারছিলেন না। গুজরাতকে এদিন প্রথম সাফল্যটা দেন যশ দয়াল। যশস্বী জয়সওয়ালকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি। এরপরই মাঠে শুরু হার্দিক ম্যাজিক। তাঁর প্রথম শিকার সঞ্জু স্যামসন। ১৪ রানে তাঁকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন। যদিও গুজরাত শিবিরে তাতে খুব একটা স্বস্তি ছিল না। কারণ ক্রিজে ছিলেন জস বাটলার। কিন্তু হার্দিক পান্ডিয়ার দাপটে সেই অস্বস্তি বেশীক্ষণ থাকেনি গুজরাত শিবিরে।

৩৯ রানে জস বাটলারকে থামিয়ে দেন। আর তাতেই রাজস্থানের বড় রানের আশা কার্যত শেষ। আরেক বিধ্বংসী তারকা শিমরণ হেটমায়ারও তাঁরই শিকার। প্রতিপক্ষ  শিবিরের সেরা তিন উইকেট তুলে নিয়ে গুজরাতের জয়টা তিনিই পাকা করে দিয়ে এসেছিলেন। ১৩০ রানেই শেষ হয়ে যায় গুজরাত টাইটান্স।

৩ উইকেট ও ৩৪ রান করে গুজরাত টাইটান্সের জয়ের নায়ক সেই হার্দিক পান্ডিয়া

লোস্কোর ম্যাচ হলেও, ফাইনালের মঞ্চে ব্যাট হাতে কিন্তু শুরু থেকেই যথেষ্ট সাবধানী ছিলেন গুজরাতের ব্যাটাররা। যদিও ২৩ রানের মধ্যে দুই উইকেট খুইয়ে গুজরাতও একটি চাপে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ত্রাতার নাম আবারও সেই হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাট হাতে শুভমন গিলের সঙ্গে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফের গুজরাত শিবিরে স্বস্তি ফেরান তিনি। তাঁকে থামতে হয় ৩৪ রানে। যদিও ততক্ষণে জয়ের মঞ্চ প্রস্থুত। বাকিটা সামলে দেন শুভমন গিল এবং ডেভিড মিলার।

ফাইনালের মঞ্চে এটাই হয়ত পারফেক্ট ক্যাপ্টেন্স পারফরম্যান্স। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে অভিষেক মরসুমেই গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করে ইতিহাস লিখলেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। ঘরের মাঠে ১ লক্ষ ৪ হাজার দর্শকের সামনে নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসাবে উত্থান হল গুজরাত টাইটান্সের।