৮ বছর পর রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই, ৪২তম জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড

Mumbai 42nd Ranji win (Source: X)

দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের তৃতীয় দিনেই। তারপর অপেক্ষা বাড়ছিল সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটার। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এলো সেই মুহূর্ত। ৮ বছর পর আবারও রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন বাণিজ্য নগরী মুম্বাই। এই নিয়ে টানা ৪২ বার। তাদের এই পরিসংখ্যানের ধারে কাছেও নেই অন্য কোন দল। আসলে কোনো দলই দশের গণ্ডিও টপকাতে পারিনি। কর্ণাটক জিতেছে ৮ বার, অন্যদিকে দিল্লী ৭ বার। বোঝাই যাচ্ছে পরিসংখ্যানের বিচারে অন্য দলগুলি কতটা পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু গত ৮ বছরে মুম্বাইয়ের কাছেও রঞ্জি ছিল এক অলীক স্বপ্নের মতো। ২ বার ফাইনালে ওঠার আস্বাদ পেলেও ট্রফি ঘরে তুলতে পারেনি তারা। কিন্তু এবার আর ভুল হয়নি তাঁদের। ফাইনালে ১৬৯ রানে বিদর্ভকে হারিয়ে রঞ্জির মুকুট জয় বাণিজ্য নগরীর। শেষ ইনিংসে বিদর্ভের সামনে লক্ষ্য ছিল ৫৩৮ রানের। এত বেশি রান তাড়া করে রঞ্জি জয়ের ইতিহাস কোন দলেরই নেই।

তবুও চতুর্থ দিন চমৎকার লড়াই দিয়েছিল বিদর্ভ। দিনের শেষে স্কোরবোর্ডে ছিল ২৪৮ রান। হাতে ছিল ৫ উইকেট।

৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক অক্ষয় ওয়াদকার, ১১ রানে তাঁর সঙ্গত দিচ্ছিলেন হর্ষ দুবে। পঞ্চম দিন লাঞ্চ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙতে অক্ষম ছিল মুম্বাই। বিদর্ভের রানের গতি যথেষ্ট মন্থর হলেও, এই ইনিংস মুম্বাইয়ের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। অনেকে এও মনে করছিলেন যে এই রান তাড়া করে বিদর্ভ জিতে যাবে না তো?! কিন্তু লাঞ্চের কিছু পরেই ঘটে ছন্দপতন। ওয়াদেকরের দুরন্ত লড়াই থামলো ১০২ রানে। পরের ওভারেই হর্ষ দুবে ফিরলেন ৬৫ রানে। তারপরেই মুখ থুবড়ে পড়লো বিদর্ভ। শেষ ৫ উইকেট পড়লো মাত্র ১৫ রানে। তনুশ কোটিয়ান নিলেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসের দুরন্ত শতরানের সুবাদে ম্যাচের সেরা ঘোষিত হলেন মুশির খান। যদিও রঞ্জি ফাইনালের শেষ দিনেও বিতর্ক পিছু ছাড়লো না ভারতীয় বোর্ডের। শেষ দিনে ফাইনাল জয় করে মুম্বাইয়ের ক্রিকেটাররা উল্লাস করলেও গ্যালারি তখন প্রায় ফাঁকা। ঘরের মাঠের রঞ্জি জয়, তারপরও সমর্থকদের উৎসাহ নেই! স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নচিহ্ন উঠে গেল রঞ্জির জনপ্রিয়তা নিয়ে। বহুবার বোর্ডের তরফে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও, তা যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সেই বিষয়টিই আরো স্পষ্ট হলো। এমনকি পুরস্কার বিতরণের মঞ্চ বোর্ডের শীর্ষকর্তাদের দেখা গেল না। যা নিয়ে সরগরম থাকলো ক্রিকেটমহল। আইপিএলকে ঘিরে যে উন্মাদনা ও উৎসাহ দেখা যায়, তার ছিটেফোঁটাও যে রঞ্জি ঘিরে নেই সেই বিষয়টিই এদিন আরো স্পষ্ট হলো।