এবারের আইপিএলে রিজার্ভ বেঞ্চে কাটিয়ে দেওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হল একাদশ, হারাতে পারে যে কোনও ভাল দলকে

Chris Lynn
Chris Lynn. (Photo by Mark Kolbe/Getty Images)

এবারের আইপিএলে রিজার্ভ বেঞ্চে কাটিয়ে দেওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হল একাদশ, হারাতে পারে যে কোনও ভাল দলকে এবারের আইপিএল সাক্ষী থাকল অনেক নাটকের। করোনার কারণে একবার টুর্নামেন্ট বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দেওয়া, তারপর ক মাস বাদে সেই টুর্নামেন্টের বাকি অংশটা সংযুক্ত আরবআমিরশাহিতে আয়োজন করা। সব কিছুই ঘটল আইপিএল ২০২১-এ। বেশ কিছু ভাল ম্যাচ, ভাল ইনিংস, ভাল বোলিং স্পেল, উত্তেজক ম্যাচ দেখলাম আমরা। তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু যাদের নিয়ে আলোচনা হয়নি? যারা এবারের আইপিএলে  বেশিরভাগ সময়টাই রিজার্ভ বেঞ্চে কাটালেন? তাঁদের কথা সেভাবে আলোচনা হয়নি। কিন্তু এদের নিয়ে দল গড়া হলে, সেই দলটা এতটাই শক্তিশালী যে তারা যে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। আসুন দেখে নেওয়া যাক আইপিএল ২০২১-এর রিজার্ভ বেঞ্চ একাদশ।

১) ক্রিস লিন (অধিনায়ক)

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে তিনি দুনিয়ার অন্যতম সেরা বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। টি টোয়েন্টিতে লিন মানেই বিপক্ষ বোলিং বিলীন। অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা ব্যাটসম্যান কেকেআর থেকে যোগ দিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ন্সে। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের হয়ে লিন খেলার সুযোগই পেলেন না। রোহিত শর্মা ও ক্যুইন্টন ডি কক-কে মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের হয়ে ওপেন করতে নামেন। তাই ক্রিস লিনকে আর এই মরসুমে খেলানো যায়নি। আশা করাই যায় পরের মরসুমে লিন যে দলেই যান জ্বলে উঠবেন।

২) এন জগদীশন (উইকেটকিপার)
ঘরোয়া ক্রিকেটে এখন অন্যতম সেরা প্রতিশ্রুতিমান উইকেটকিপার হিসেবে দেখা হচ্ছে তামিলনাড়ুর এন জগদীশনকে। ব্যাটের হাতটা দারুণ, সঙ্গে কিপিংটাও ভাল করেন। চেন্নাই সুপার কিংসের রিজার্ভ বেঞ্চে বসে তিনি। বলাই বাহুল্য ধোনির জন্য তাঁকে ডাগ আউটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়ড়দের মধ্যে প্রতিশ্রুতির বিচারে জগদীশন অন্যতম সেরা।

৩) ডেভিড মালান
ইংল্যান্ডের হয়ে বেশ কয়েকবার অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলা ডেভিড মালানকে টি টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে সেরাদের তালিকায় রাখা হয়। পঞ্জাব কিংস মালনাকে দলে নিয়েছিল বড় আশা করেষ। কিন্তু ভারতে আয়োজিত আইপিএলের প্রথমার্ধে মালান প্রীতি জিন্টার দলে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। পরে আর সেভাবে তাঁকে ব্যবহার করা হয়নি। তিনি রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা আইপিএল একাদশে অনায়াসে ঠাঁই পাবেন।

৪) টিম ডেভিড
গত নিলামে আরসিবি-র চমক ছিল সিঙ্গাপুরের তারকা ক্রিকেটার টিম ডেভিড। ব্যাটে বলে পারদর্শী টিম ডেভিড ভাল কিছু করবেন তেমন আশা ছিল। কিন্তু দলে চারজন বিদেশীকেই খেলানো যাবে, এই কারণে বিরাট কোহলি টিম ডেভিডকে সেভাবে সুযোগ দেননি। কিন্তু টিমের যোগ্যতা আছে আইপিএল ২০২১-এর রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া টিমে থাকার।

৫) শেলডন জ্যাকসন
কেকেআর-হয়ে খেলার সুযোগ পেলেন না। তবে তিনি দারুণ ক্রিকেটার।

৬) অঙ্কুল রায়
২০১৮ সালের অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে সর্বাধিক উইকেটশিকারী ছিলেন অঙ্কুল রায়। ব্যাটের হাতটাও ভাল। এরপর অঙ্কুলকে তাদের দলে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ন্স। কিন্তু ২০১৯ সালে একটা ম্যাচ খেলার পর, মুম্বই ইন্ডিয়ন্স তাঁকে আর খেলার সুযোগ দেয়নি। এটা ঠিক অঙ্কুলকে সুযোগ না দেওয়াটা ভুল।

৭) কৃষ্ণাপ্পা গৌতম
দেশের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবেব দেখা হয় তাঁকে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরেও তাঁকে জাতীয় দলে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। অলরাউন্ডার গৌতমকে নিয়ে অনেক আশা। অতীতে আইপিএলে বেশ কিছু ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন। কিন্তু এবার ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস তাঁকে একটা ম্যাচও খেলায়নি।

৮) কমলেশ নাগারকোটি
দারুণ বোলার। গতি থেকে স্যুইং, সবেতেই সেরা। কিন্তু চোট সমস্যার জন্য নাগারকোটিকে সেভাবে পায়নি কেকেআর। পরে যখন তিনি ফিট হন, কলকাতা তাদের বোলিং লাইনআপ সেট করে ফেলে। তিনি এই মরসুমে রিজার্ভ বেঞ্চেই কাটালেন। কিন্তু আগামী মরসুমগুলিতে তিনি আইপিএল দাপানোর ক্ষমতা রাখেন।

৯) কুলদীপ যাদব
চায়নম্যান রহস্য স্পিনার। তাঁর উত্থানটা হয়েছিল ধুমকেতুর মত। কুলদীপ বোলিং আসল রহস্যের অন্য নাম। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে অসংখ্যা ম্যাচে জিতিয়েছেন। কিন্তু এ মরসুমে তাঁর চোটটা খুব ভুগিয়েছে। এদিকে, কলকাতার নারিন-বরুণ যুগলবন্দিটাও দারুণ জমে গিয়েছে। কুলদীপ এবারের আইপিএলটা বসেই কাটালেন, পরে চোটের কারণে দেশে ফিরে যান।

১০) উমেশ যাদব
দেশের অন্যতম সেরা পেসার। কিন্তু এই মরসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের পেস বোলিং আক্রমণে রাবাদা, নোকিয়ার সঙ্গে আবেশ খান যেভাবে দারুণ ছন্দে বল করেছেন তাতে উমেশকে রিজার্ভ বেঞ্চেই বসে থাকতে হয়, তবে তাঁর মত বোলার দেশে খুবই কম আছে।

১১) তাবরিজ শামসি
দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে তিনি বল হাতে ফুল ফুটিয়েছেন। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও তিনিও সফল। টি টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে তাঁকে দুনিয়ার সেরা বোলারদের তালিকায় রাখা হয়। এবার আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে একটাই ম্যাচ খেলেন শামসি। সেই ম্যাচে ৩৪ রান দেওয়ায়, আর তাঁকে দলে নেওয়া হয়নি। কিন্তু শামসি নি:সন্দেহে আরও কতগুলি সুযোগ পেতে পারতেন। যাই হোক তিনি অনায়াসে রিজার্ভ বেঞ্চে বসা ক্রিকেটারদের নিয়ে আইপিএল একাদশে ঠাঁই পাবেন।